এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম সেরা একটি টুরিস্ট জনপ্রিয় দেশ হল থাইল্যান্ড । বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর ভিসিটর যায় থাইল্যান্ড এ । থাইল্যান্ড ইমিগ্রেশন অফিস এর তথ্য অনুযায়ী বিগত কয়েক বছরে প্রায় ১৩৯,৬২২ জন বাংলাদেশী থাইল্যান্ড গেছে ভ্রমন এবং রিলেক্স এর জন্য । থাইল্যান্ড এ রয়েছে প্রচুর বিচ এবং আইল্যান্ড ।
আরো রয়েছে দর্শনীয় স্থান এবং শপিং মল, ভাসমান বাজার সহ আরো অনেক কিছু । বাংলাদেশ থেকে ভ্রমন ছাড়াও কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে থাইল্যান্ড এ যায় । আজকের আর্টিকেল এ আলোচনা করবো কিভাবে থাইল্যান্ড ভিসা করবেন এবং কত প্রকার ভিসা পাওয়া যায় থাইল্যান্ড এ সব কিছু নিয়ে ।
থাইল্যান্ড ভিসা কত প্রকার
বাংলাদেশ থেকে আপনি নিচের দেওয়া চার টি ক্যাটাগরি এর ভিসা পাবেন বাংলাদেশে অবস্থিত থাইল্যান্ড এমব্যাসি থেকে ।
- ট্রান্সজিট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- মেডিক্যাল ভিসা
বাংলাদেশে সব চেয়ে জনপ্রিয় ভিসা হল টুরিস্ট ভিসা । থাইল্যান্ড এ সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ ৩ মাস এবং মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ ৬ মাস । এই ভিসা নিয়ে আপনি থাইল্যান্ড এ ৬০ দিন থাকতে পারবেন ।
থাইল্যান্ড ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে
থাইল্যান্ড এ যেতে হলে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করত হবে এই জন্য আপনার বেশ কিছু পার্সোনাল কাগজপত্র সহ কিছু ডকুমেন্ট দরকার হবে । নিচে এই বিষয় গুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেওয়া হল ।
পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি
থাইল্যান্ড সহ আপনি বাংলাদেশের বাহিরে যে দেশেই যান না কেন আপনার প্রথমে পাসপোর্ট দরকার হবে । ভিসার জন্য আবেদন করার আগে দেখে নিবেন আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৬ মাস আছে কিনা । এছাড়াও পাসপোর্ট এ দুই টি ফাকা পাতা থাকতে হবে সিল দেওয়ার জন্য । আপনার যদি পুরোনো কোন পাসপোর্ট থাকে তাহলে নতুন পাসপোর্ট এর সাথে জমা দিতে হবে ।
এছাড়াও আরো লাগবে ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে । ছবি তুলবেন ভিসা আবেদন করার কিছু দিন আগে ।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট
আপনি যদি থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে । এবং বর্তমান ব্যালেন্স সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থাকতে হবে । আর যদি ফ্যামেলি টুর এর যেতে চান তাহলে ব্যাংক এ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থাকতে হবে । মোটামুটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট হিসাবে এই তথ্য গুলো জমা দিতে হবে থাইল্যান্ড ইমিগ্রেসন অফিসে ।
বিভিন্ন পেশা জীবীদের জন্য বেশ কিছু ভিসা ডকুমেন্ট দরকার হবে
- আপনি যদি চাকরিজীবী হন তাহলে NOC বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে । এর সাথে অফিসের ভিসিটিং কার্ড, আই ডি কার্ড সহ স্যালারি ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়া লাগবে ।
- আপনার প্রফেশন যদি ফ্রিল্যান্সিং হয় তাহলে প্রোফাইল স্ক্রিনশট, আর্নিং হিস্টোরি ইত্যাদি ডকুমেন্ট আকারে জমা দিতে হবে ।
- ছাত্র বা স্টুডেন্ট হলে স্টুডেন্ট আই ডি কার্ড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে রিকোমেন্ডেশন লেটার সহ আরো কিছু লাগতে পারে ।
- ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের কপি, লিমিটেড কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল/ কোম্পানি প্যাড এবং ভিজিটিং কার্ড জমা দিতে হবে ।
- ডাক্তার বা আইনজীবী হলে BMDC সার্টিফিকেট, হাসপাতাল থেকে NOC এবং বার কাউন্সিল এর সনদ অথবা ল ফার্মের NOC ।
থাইল্যান্ড মেডিকেল ভিসা ২০২৩
থাইল্যান্ড মেডিকেল ভিসার জন্য প্রথমে লাগবে থাইল্যান্ড এর হাসপাতাল এর অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং বাংলাদেশের জেকোন ডাক্তার এর রেকমেন্ডেশন লেটার এর কপি জমা দিতে হবে । আরো কিছু ডকুমেন্ট লাগবে নিচে দেওয়া হল ।
- থাইলান্ডের হাসপাতাল হতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার
- রোগীর টেস্ট রিপোর্ট
- আগের সকল মেডিকেল রিপোর্ট
- রোগীর ট্রাভেল মোড ইত্যাদি
থাইল্যান্ড ভিসা খরচ
থাইল্যান্ড এন্ট্রি সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা ফি ৩০০০ হাজার টাকা এবং মেয়াদ ৩ মাস । আপনি এই ভিসা নিয়ে ৬০ দিন থাইল্যান্ড এ থাকতে পারবেন ।
মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার ফি ১৫০০০ টাকা এবং এই ভিসার মেয়াদ ৬ মাস । আপনি এই ভিসা নিয়ে ৬০ দিন থাইল্যান্ড এ থাকতে পারবেন ।
থাইল্যান্ড ভিসা আবেদন ফরম
আপনি থাইল্যান্ড ভিসা আবেদন ফরম অনলাইন থেকে সংগ্রহ করতে পারেন আবার এম্বাসিতে গিয়ে নিতে পারেন । তবে বেশির ভাগ মানুষ অনলাইনেই ভিসার জন্য আবেদন করে । আপনাকে নিচে লিংক দেওয়া হল থাইল্যান্ড ভিসা আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করার জন্য ।
https://www.obokash.com/thailand-visa
https://arnimholidays.com/thailand-visa-from-bangladesh
আরো পড়ুনঃ কসোভো ভিসা ২০২৩
থাইল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে
ভিসা অনুযায়ী আপনার টাকা লাগবে । কোন ভিসা নিয়ে থাইল্যান্ড যেতে চান এবং কি কারনে যাবেন এইটার উপর নির্ভর করবে আপনার কত টাকা খরচ হবে ।
ভিসার ধরণ | ভিসা ফি | ভিসার মেয়াদ | থাকার সময় সীমা |
টুরিস্ট ভিসা (সিঙ্গেল এন্ট্রি) | ৩৫০০ টাকা | তিন মাস | ৬০ দিন |
টুরিস্ট ভিসা (মাল্টিপল এন্ট্রি) | ১৭,০০০ টাকা | ৬ মাস | ৬০ দিন |
ট্রান্সজিট ভিসা (সিঙ্গেল এন্ট্রি) | ৩০০০ টাকা | ৩ মাস | ৬০ দিন |
ট্রান্সজিট ভিসা (মাল্টিপল এন্ট্রি) | ৫৫,০০ টাকা | ৬ মাস | ৬০ দিন |
নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা | ৭০০০ টাকা | ৩ মাস | ৯০ দিন |
নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা (মাল্টিপল এন্ট্রি) | ১৭,০০০ টাকা | ১ বছর | ৯০ দিন |
নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা (মাল্টিপল এন্ট্রি) | ৩৫,০০০ টাকা | ৩ বছর | ৯০ দিন |
FAQ
থাইল্যান্ড যেতে কি ভিসা লাগবে
আপনি কোন কাজের জন্য থাইল্যান্ড যাবেন এর উপর নির্ভর করবে কোন টাইপের ভিসা লাগবে । যদি ভিসিট এর উদ্দেশ্য নিয়ে যেতে চান তাহলে টুরিস্ট ভিসা করতে হবে । আর অন্য কাজের জন্য যেতে চাইলে অন্য যেসকল ভিসা আছে ঐ গুলো করতে হবে ।
থাইল্যান্ড ভিসা খরচ কত?
থাইল্যান্ড সিঙ্গেল এট্রি টুরিস্ট ভিসার খরচ ৩০০০ টাকা এবং ডাবল এন্ট্রি এর খরচ ১৭,০০০ টাকা ।
ভারত থেকে থাইল্যান্ড যেতে পাসপোর্ট প্রয়োজন
হ্যা, ভারত থেকে থাইল্যান্ড যেতে পাসপোর্ট লাগে ।
থাইল্যান্ডে বছরে কতবার যাওয়া যায়
আপনার ডাবল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে বছরে যত বার খুশি যেতে পারবেন ।